তালিবান

Sadat Mahmud
0

 




আজ আপনাদের একটি গল্প শোনাব-


"হিংস্র, উগ্রবাদী এবং চরম নারীবিদ্বেষী, নারী অধিকার হরণকারী জঙ্গিগোষ্ঠী তালিবানের উত্থানের গল্প"

আসলে কেন জন্ম হয়েছিল তালেবানের...??

তখন নব্বইয়ের দশকে সবে সোভিয়েত মুক্ত হয়েছে আফগানিস্তান, সোভিয়েত (রাশিয়া) সমর্থিত নজিবুল্লাহর সরকার পতনের পর আফগানিস্তানে চার বছর অরাজগতা চলে, চোরের উৎপাত চারিদিকে লুটপাট রাস্তার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে চাঁদা আদায় গুম খুন এগুলো ছিল নিত্য দিনের সাধারন ঘটনা। আর মানুষের কাছে সবচাইতে অসহনীয় যে বিষয়টি ছিল তা হল চাঁদাবাজি.. যার কাছে অস্ত্র সেই চাঁদা দাবি করে এভাবে চাঁদা দিতে দিতে মানুষেরা নিঃস্ব।
এরকম একজন চাঁদাবাজ ছিল 'সালেহ' এবং‌ তার দল । সে এমন কোন কাজ নেই যা করত না মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা, সুন্দরী নারীদের পেলে উঠিয়ে নিয়ে গণধর্ষণ ইত্যাদি।
এরমধ্যে একবার কান্দাহার থেকে বাণিজ্য করতে যাওয়ার সময় দু'জন নারী কে উঠিয়ে নিয়ে যায় সালেহ ও তার বাহিনী এরপর তাদেরকে গণধর্ষণ করে। নরপশু গুলো এখানেই ক্ষান্ত হয়নি অসহায় মেয়ে দুটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে‌, মেয়েটির দরিদ্র বাবা অসহায়ের মতো দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার না পেয়ে আত্মহত্যার উপক্রম হন । কান্দাহারের দরিদ্র গ্রামবাসী এ ঘটনাটিকে অসহায়ের মত দেখেও কিছু করতে পারেনি।
এরপর কান্দাহারে শুরু হয় একটি ছোট যুদ্ধ - ৫ জন যুদ্ধবাজ নেতার মধ্যে শুরু হয় এই যুদ্ধ। টানা পাঁচদিন যুদ্ধের পর ষষ্ঠ দিন শুক্রবার, সবাই জুমার নামাজ আদায়ের পর অসহনীয় এই পরিস্থিতিতে একটি মিছিল বের করে। এই সময় এক সাবেক সোভিয়েত (রাশিয়া) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এক মুজাহিদ নাম তার বাডু, সে নির্বিচারে ট্যাংক থেকে গোলাবারুদ নিক্ষেপ করে এতে ওই মিছিলে থাকা অনেক কান্দাহার বাশি নিহত হন।

এদিকে সোভিয়েতের (রাশিয়া) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পর এক মুজাহিদীন মোল্লা আব্দুস সালাম জায়িদ ফিরে এসেছিলেন কান্দাহারে তার গ্রামে সেখানে সে একটি মসজিদের ইমামতি করতেন এবং ছোট একটি মাদ্রাসা চালাতেন । গ্রামের অসহায় মানুষের এমন অবস্থা দেখে তিনি নির্ঘুম রাত কাটাতেন ভাবতেন কি করা যায়... অসহায়ের মতো আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন এই পরিস্থিতি থেকে কীভাবে বের হওয়া যায়। হঠাৎ তার মনে পড়লো তার সহযোগী মুজাহিদীন মোল্লা মোহাম্মদ ওমর এর কথা। মোল্লা মোহাম্মদ ওমর ছিলেন একজন সোভিয়েতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বীর মুজাহিদ। তিনি চলে গেলেন মোল্লা মোহাম্মদ ওমর এর কাছে। আব্দুস সালাম তাকে গিয়ে বললেন দেখো ভাই ওমর কান্দাহারের এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোলনের জন্য কিছু করা প্রয়োজন একমাত্র তুমিই পারো সেই পদক্ষেপ নিতে... মোল্লা মোহাম্মদ ওমর এর স্ত্রীর সবেমাত্র একটি পুত্র সন্তান সন্তান হয়েছে.. অমর বললেন আমার স্ত্রীর সবে মাত্র সন্তান হয়েছে এ সময় আমার পক্ষে পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন তবে আপনারা যদি আমাকে ওয়াদা করেন আপনারা কখনো আমাকে ফেলে যাবেন না তাহলে আমি আপনাদের সাথে যাবো। সকলে মোল্লা ওমর কে ওয়াদা করলেন সবাই মিলে গেলেন একটি মাটির মসজিদে সেখানে আব্দুস সালামের কিছু ছাত্র ও কয়েক জন গ্রামবাসী মিলে একটি সংগঠন তৈরি হলো।
তাদের কাছে সেরকম কোনো অস্ত্র ছিল না সোভিয়েত আমলের পুরনো কয়েকটি অস্ত্র একটি পুরনো মোটরসাইকেল। আব্দুস সালাম তার জীবনের সমস্ত আয় "দশ হাজার আফগানি মুদ্রা"
দান করেছিলেন । এরপর মোল্লা মোহাম্মদ ওমর এর নেতৃত্বে মিশন শুরু হয় প্রত্যেকটি দখলদার চেকপোষ্টে তারা আক্রমণ চালায় এতে পালিয়ে যেতে শুরু করে দস্যুরা। সেখানকার অস্ত্রগুলো তারা দখল করে। আস্তে আস্তে সমৃদ্ধ হয় দলটি। গ্রামবাসীরা ধীরে ধীরে স্বস্তিতে ফিরতে শুরু করে।
এরপর তাদের প্রধান মিশন তারা সালেহ এর চেকপোষ্টে আক্রমণ করে। এতে পরাজিত হয়ে সালেহ কে একলা ফেলে পালিয়ে যায় তার দল বল। সালেহ এর কাছে তারা প্রচুর অর্থ পান।
"মোল্লা মোহাম্মদ ওমর কান্দাহার শহরের মাঝখানে
সালেহ কে মুখের ভেতর টাকা পুরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেন, বিচার পান ওই মেয়ে দুটির সেই দরিদ্র হতভাগা বাবা।" এতে মোল্লা ওমর ও তার দলের জনপ্রিয়তা গগনচুম্বী হয়ে যায় দলে দলে লোকজন তার সাথে যোগদান করে.....
"জন্ম হয় তালিবানের............🙃🙃"
(তালিবান শব্দটি এসেছে তালিব থেকে যার অর্থ -ছাত্র)।
পরবর্তীতে তারা সমস্ত বিদ্রোহ দমন করে এবং ইসলামী খেলাফতের পর ইতিহাসের সবচেয়ে কঠোর ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে..।

[যারা নারী অধিকার নিয়ে চিল্লাফাল্লা করতেছেন তাদের জন্য এই পোস্টটি ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না..🙂]

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)